বরখাস্তকৃত ডিআইজি বাতেনের অবৈধ পশুর হাট স্থানান্তরের দাবিতে মধ্যনগরে মানববন্ধন
সুনামগঞ্জ: ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে ফ্যাসিবাদী সরকারের সুবিধাভোগী ও শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামী বরখাস্তকৃত রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আব্দুল বাতেন ও তার পরিবারের ক্ষমতাবলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠিত পশুর হাট স্থানান্তরের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের সাতুর নতুন বাজারে আয়োজিত এ মানববন্ধনে কয়েক'শ স্থানীয় লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ১ যুগের বেশি সময় ধরে দাতিয়াপাড়া গ্রামের লায়েছ ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে স্কুলের ফান্ডের নামে অবৈধ পশুর হাট বসিয়ে অবৈধ উপার্জন করছেন বরখাস্তকৃত ডিআইজি বাতেন, তার ভাই পদচ্যুত উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক ভূঁইয়া, ভাতিজা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিম মাহমুদ ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। অবৈধ হাটে বিরুদ্ধে এলাকাবাসী বারবার প্রশাসনকে অবগত করলেও বাতেনের প্রভাবে উপজেলা প্রশাসন কিংবা পুলিশ অবৈধ এ পশুর হাটের বিরুদ্ধে কোন উদ্যোগ নেয়নি।
মানববন্ধনে এলাকাবাসী অবৈধভাবে পরিচালিত পশুর হাট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ থেকে স্থানান্তর করে সরকার কর্তৃক বৈধভাবে সাতুর নতুন বাজারে একটি পশুরহাট স্থাপন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক ভূঁইয়াকে অপসারণ করে নিয়মানুযায়ী নতুন কমিটি গঠনসহ বিভিন্ন দাবি তুলেন।
জানা গেছে, সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের দাতিয়াপাড়া গ্রামে ২০১৪ সালে লায়েছ ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন ডিআইজি বাতেনের পরিবার। পরবর্তীতে ২০২২ সালের জুলাই মাসে এমপিও ভুক্ত হলেও প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কয়েকজন কর্মচারী ছাড়া বাকী পদে এখনো এমপিওভুক্ত শিক্ষক না পাওয়ায় বাতেন পরিবারের গঠিত ট্রাস্টের নিয়মেই চলছে প্রতিষ্ঠানটি।
জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির শুরু থেকেই ট্রাস্ট এবং প্রতিষ্ঠানটি সভাপতি ছিলেন সাবেক ডিআইজি আব্দুল বাতেন। আওয়ামী সরকার পতনের পর তিনি সভাপতি পদ থেকে সরে গিয়ে কৌশলে তার বড় ভাই আব্দুর রাজ্জাক ভূঁইয়াকে এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি করেছেন যা আইনবহির্ভুত বলে এলাকাবাসীর দাবি।
এর আগে গত ২২ জানুয়ারি সাতুর নতুন বাজার সংলগ্ন এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবর অবৈধ এ পশুর হাট অপসারণে একটি আবেদন করা হয় যেখানে এলাকাবাসী উল্লেখ করেন যে ২০২১ সালের ২৫ এপ্রিলও একইভাবে প্রশাসন ও পুলিশ বরাবর আবেদন করা হয় কিন্তু ক্ষমতাসীনদের প্রভাব বিস্তারকারী বাতেন ও তার পরিবারের কারণে তৎকালীন প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
এ ব্যাপারে দাতিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট আরিফুর রহমান ঝিনুক বলেন, অত্র এলাকায় একটি পশুর হাট প্রয়োজন কিন্তু অবৈধ এ পশুর হাটের কারণে একদিকে যেমন সরকার দীর্ঘদিন ধরে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তেমনি এলাকাবাসীকেও গুণতে হচ্ছে বাড়তি মাশুল। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে ঐতিহ্যবাহী সাতুর নতুন বাজারে নিয়মতান্ত্রিকভাবে একটি হাট বসানোর উদ্যোগ গ্রহণ করুক। একইসাথে লায়েস ভুঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ বিধিসম্মতভাবে পরিচালনার ব্যাপারে উদ্যোগী হোক।’